Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কৃষিতেই হবে সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ

কৃষিবিদ ড. মোঃ আবদুল মুঈদ

১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্ব খাদ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য Grow, Nourish, Sustain. Together. Our Actions are our Future’. এর ভাবানুবাদ “সবাইকে নিয়ে একসাথে  বিকশিত হোন, শরীরের যতœ নিন, সুস্থ থাকুন। আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ”। যা অত্যন্ত যৌক্তিক ও অর্থবহ। প্রতিবারের তুলনায় এবারের খাদ্য দিবসের প্রেক্ষাপট অনেকটাই ভিন্ন। একবিংশ শতাব্দীর আজকে এই সময়ে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্ব সম্মুখীন এক ভয়াবহ অদৃশ্য শত্রæ কোভিড-১৯ নামক ভাইরাসজনিত রোগ করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ে। করোনার মহামারীর তাÐব থেকে মুক্তি পায়নি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও। করোনার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক মহাসংকট। বাড়ছে খেতে না পাওয়া মানুষের সংখ্যা। এ দিকে বিশ্বজুড়ে করোনা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়ি়য়ে গিয়েছে। বাংলাদেশে দিনে দিনে মৃত্যুর মিছিল যখন বাড়ছে, ঠিক তখন এই রোগ হতে মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে ঢালরূপে আবির্ভূত হয়েছে বাংলার কৃষি। সেই ঢাল হাতে নিপুণ সৈনিক বাংলার কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সর্বস্তরের কর্মচারীবৃন্দ। আর এই পুরো কর্মযজ্ঞের সফল পরিচালক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত মন্ত্রণালয় কৃষি মন্ত্রণালয়, যার মূল চালিকা আসনে বসে আছেন এই কৃষি পরিবারেরই একজন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব মন্ত্রণালয়ের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, এমপি।


করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে, তারই জের ধরে বাড়ছে খেতে না পাওয়া মানুষের সংখ্যা। জেনেভায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য পরিকল্পনার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে অভুক্ত মানুষের সংখ্যা ১৩ কোটি ৫০ লাখ। করোনার প্রকোপে সংখ্যাটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। অর্থাৎ, প্রায় ২৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ এ বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে   গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষিবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ প্রদান করেন “এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে”। এই নির্দেশনাকে পালনের জন্য দেশের এই মহামারীতে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলায় মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর পদক্ষেপগুলো রীতিমতো বিশ্ব নজির হিসেবে ইতোমধ্যেই সমাদৃত হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র ও ভাসমান মানুষেরা। এদের কথা মাথায় রেখে সরকার বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে। সারাদেশে নিম্নআয়ের মানুষদের ১০ টাকা কেজি দরে ৯০ হাজার টন চাল দেওয়া হয়েছে।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ছয় মাসের খাদ্য এবং নগদ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সারা দেশে অতিরিক্ত সাড়ে ৬ কোটি টাকা ও ১৩ হাজার টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এসব চাল ও টাকা ত্রাণ হিসেবে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৬৪ জেলায় ১২ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা এবং প্রায় ৪৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। সরকারি এই সমস্ত কার্যক্রমে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের সকল পর্যায়ের কর্মচারীরা টেকসই সুষম খাদ্য উৎপাদন, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ, কৃষি পণ্য উৎপাদনে যতœ ও সতর্কতা এবং সর্বোপরি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করোনার বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে চার শতাধিক ডিএই কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বগুড়া জেলার উপপরিচালকসহ মোট দশ জন করোনায় ইন্তেকাল করেছেন। তবুও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর একটি মুহ‚র্তের জন্যও কৃষকের পাশ ছাড়েননি।


বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় খাদ্য সংগ্রহের কাল হিসেবে পরিচিত বোরো মৌসুমের প্রায় শতভাগ ধান করোনাকালেই কর্তন সম্পন্ন হয়েছে দেশজুড়ে। আসন্ন আমনের বীজতলা প্রস্তুতেও ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি। করোনার  মধ্যে আবার “মড়ার উপর  খাঁড়ার ঘা” হিসেবে হয়ে গেল সামুদ্রিক ঝড় আম্ফানের তাÐব। এই ঝড়ের তাÐবে বাংলাদেশের প্রধান ফল মৌসুমে যেসব ফল উৎপাদিত হয় যেমন আম, কাঁঠাল, লিচুসহ অন্যান্য ফলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এলাকাভিত্তিক ভিন্ন হলেও গড়ে প্রায় ২০-৩০ শতাংশ আম ও লিচুর ফলন নষ্ট হয়েছে। এতকিছুর পরও এবার বাংলাদেশ ৭ (সাত) কোটি টন বার্ষিক শস্য উৎপাদনের    মাইলফলক স্পর্শ করেছে। ধান ও সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়, আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম স্থানের পাশাপাশি ইলিশ উৎপাদনে ১ম ও মাছ উৎপাদনে ২য় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন দানাদার শস্য ধান উৎপাদনে বিশ্বে ৩য় স্থান অর্জনকারী দেশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের ধানের উৎপাদন চাহিদা ছিল ৩.৫০ কোটি টন, সেখানে আমরা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি ৩.৬৪ কোটি টন। এই উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্যের কারণেই এখন আমাদের ১৯.৩ লক্ষ টন ধারণক্ষমতার মধ্যে ইতোমধ্যেই ১২.৬৫ লক্ষ টন মজুদ করা সম্ভব হয়েছে। কৃষি নির্ভর এই বাংলাদেশ যেন করোনাকালীন সময়ে কোনোরূপ খাদ্য সংকটে না পড়ে তার পূর্ণ প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩.২৯৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে ৩৬.৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন, আমন ৫৮.৯৫ ২৯৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে ১৫৩.৮ লক্ষ মেট্রিক টন। বিশ্ব খাদ্য সংকটের এই ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের এই অর্জন বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আর এই সফলতা সম্ভব হয়েছে বাংলার নায়ক কৃষক, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।


যেকোন দুর্যোগকালে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম হয়ে বেঁচে থাকাতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্য। যে কোনো খাবার খেয়ে পেট ভরানো যায়, কিন্তু তাতে দেহের চাহিদা মিটিয়ে সুস্থ থাকা যায় না। বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন ঘাটতি পূরণ হলেও পুষ্টি সমস্যা অনেক বড় আকারে বিরাজিত রয়েছে। ফলে এ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পুষ্টিহীনতার কারণে নানা ধরনের রোগের শিকার হয়ে অহরহ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তার উপরে এবার যোগ হয়েছে করোনার প্রভাব। এসমস্ত সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভিন্ন কার্যক্রম  গ্রহণ করেছেন। ২০১৮-১৯ সালের হিসাব মতে বাংলাদেশে মোট ৭ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফলের আবাদ হয়েছিল।  উৎপাদন হয়েছিল ১২১.৫২ লক্ষ মেট্রিক টন। এ বছর ২০১৯-২০ সালে সেই লক্ষমাত্রা বেড়ে প্রায় ৭ লাখ ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফলের আবাদ এবং ১২৩.৮৯ লক্ষ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে।


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে গণভবন প্রাঙ্গণে একটি ফলদ, একটি বনজ এবং একটি ঔষধি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে সারাদেশে ১ কোটি চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সমসাময়িককালে করোনাকালীন মহামারী ও আম্ফান ঝড়ের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে কৃষি মন্ত্রণালয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে পদক্ষেপটি নিয়েছে সেটি হলো,তার আওতাধীন সকল দপ্তর, অধিদপ্তর, সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শক্রমে দশটি (১০) সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করেছেন। এর মধ্যে  অন্যতম হচ্ছে, মৌসুমি ফল এবং কৃষিপণ্য পরিবহণে দেশের বিভিন্ন এলাকায়  ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহণের অবাধে যাতায়াত নির্বিঘœ করা; পরিবহণের সময় যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর মাধ্যমে কোনরূপ হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; বিআরটিসির ট্রাক ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহণ; স্থানীয়ভাবে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা বাড়ানো; পার্সেল ট্রেনে মৌসুমি ফল এবং কৃষিপণ্য পরিবহণের আওতা বাড়ানো, হিমায়িত ওয়াগন ব্যবহার করা যায় কিনা তা নির্ধারন; ফিরতি ট্রাকের বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল হ্রাস; ত্রাণ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীতে আম, লিচুসহ মৌসুমি ফল অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিকট অনুরোধ জানানো; অনলাইনে এবং ভ্যানযোগে ছোট ছোট পরিসরে কেনাবেচার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ; প্রাণ, একমি, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান যারা কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, ম্যাঙ্গোবার, আচার, চাটনি প্রভৃতি তৈরি করে,তাদেরকে এবছর বেশি বেশি আম-লিচু কেনার অনুরোধ জানানো ও মৌসুমি ফলে যেন কেমিক্যাল ব্যবহার করা না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সমন্বিতভাবে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা, আম্ফান ঝড়ে ঝরে পরা আমকে রক্ষা করতে স্টিপিং পদ্ধতিতে কাঁচা আম সংরক্ষণ বিষয় সচেতনতা বৃদ্ধি ও এ সংক্রান্ত লিফলেট বিতরণ। সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে ইতোমধ্যেই  বাস্তবায়নরে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পত্রজারীসহ আদেশ প্রদান সম্পন্ন করেছেন। আশা করা যায়, ধানের মতো আমাদের আরেক প্রধান কৃষি পণ্য মৌসুমি ফল সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণেও কৃষি মন্ত্রণালয় সফল হয়েছে।


কৃষিবান্ধব এই সরকার বরাবরই মনে করেন, যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষি হবে প্রধান রক্ষাকবচ হাতিয়ার। সমসাময়িক সময়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার পর্যায়ে রয়েছে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়ন কর্মসূচি। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০২০ (তিন হাজার বিশ) কোটি টাকার একটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৫১ হাজার ৩০০টির মতো কৃষি যন্ত্রপাতি প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বিতরণের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ‘যন্ত্রের মাধ্যমেই হবে আগামীর কৃষি’ এবং‘কৃষিতেই হবে সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ’ এই প্রত্যয় নিয়েই অগ্রসর হচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২০ সফল হোক এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

 

মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, ফোন : ৯১৪০৮৫০, ই-মেইল : dg@dae.gov.bd

 

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon